সর্বশেষ আপটেড

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং আন্তঃব্যাংকিং দেনা পাওনা নিষ্পত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা নিরূপণ

এইচএসসি ২০২১ ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশা করছি সকলেই সুস্থ ও নিরাপদে আছো। দ্বাদশ শ্রেণির ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য ৬ষ্ঠ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ৩১ আগস্ট ২০২১ খ্রি. তারিখে মাউশি অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। তাই আজ এসেছি তোমাদের এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহ ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর সমাধান নিয়ে। অ্যাসাইমেন্টের নির্ধারিত শিরোনাম- দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং আন্তঃব্যাংকিং দেনা পাওনা নিষ্পত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা নিরূপণ।

তোমাদের বোঝার সুবিধার্থে এই আর্টিকেলের প্রথম অংশে ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা অ্যাসাইনমেন্টের প্রশ্ন দেয়া হয়েছে এবং পরবর্তী অংশে ক্রমান্বয়ে ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর সমাধান/ উত্তর দেয়া হয়েছে।

এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহ ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা অ্যাসাইনমেন্ট

অ্যাসাইনমেন্ট : দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং আন্তঃব্যাংকিং দেনা পাওনা নিষ্পত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা নিরূপণ।

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং আন্তঃব্যাংকিং দেনা পাওনা নিস্পত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা নিরূপণে:-

১. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে।

২.আওতা বর্ণনা করতে হবে।

৩. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলি বর্ণনা করতে হবে।

৪. অর্থ বাজার নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যাখ্যা করতে হবে।

৫. নিকাশ ঘরের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে হবে।

এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহ ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর সমাধান

ব্যাংক হল এক ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা সাধারণ মানুষের সঞ্চয় বা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ আমানত হিসেবে সংগ্রহ করে পুঁজি গড়ে তোলে এবং সেই পুঁজি উদ্যোক্তাদের ঋণ বা বিনিয়োগ হিসেবে প্রদানের মাধ্যমে লাভ বা মুনাফা অর্জন করে। ব্যাংক আমানত ও ঋণ সেবার বাইরেও বিভিন্ন আর্থিক পরিষেবা প্রদান করে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকে। আধুনিক পুজিঁবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যাংক একটি দেশের প্রধান অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি হিসেবে বিবেচ্য।

দেশ-বিদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সচল ও কার্যকর রাখতে ব্যাংকের ভূমিকা অপরিসীম। ব্যক্তি কিংবা রাষ্ট্রীয় সঞ্চয়, লেনদেন ইত্যাদির গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে এ প্রতিষ্ঠান। ব্যাংক ব্যক্তি কর্তৃক প্রদেয় সঞ্চিত অর্থ জমা রাখে এবং ঐ অর্থ ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানে ঋণ বা বিনিয়োগ হিসেব প্রদান করে তাদের ব্যবসায়ীক কার্যক্রম পরিচালনা করে। এটি নির্দিষ্ট সময় বা মেয়াদান্তে গ্রাহকের জমাকৃত অর্থের উপর সুদ বা মুনাফা প্রদান করে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধারণা ব্যাখ্যা

(ইংরেজি: ‘Central Bank’, কখনো কখনো রিজার্ভ ব্যাংক (Reserve Bank), বা আর্থিক কর্তৃপক্ষ (Monetary Authority) নামেও পরিচিত) হচ্ছে এমন একটি প্রতিষ্ঠান যারা কোন একটি দেশের মুদ্রা, অর্থ সরবরাহ এবং সুদের হার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাধারণত তাদের নিজ নিজ দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকিং পদ্ধতির তত্ত্বাবধায়ক। বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিপরীত কর্মপদ্ধতি হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির একটি একচেটীয়া প্রকৃতির প্রক্রিয়া অবলম্বন করে এবং দেশের জাতীয় মুদ্রা ছাপে, যা সাধারণত দেশের আইনত: কার্যকলাপ হিসাবে পরিচালিত হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ হল মুদ্রা তৈরি করা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক হলাে এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা মুদ্রাবাজারে শীর্ষে অবস্থান করে দেশের ব্যাংকব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে থাকে। এটি সরকার কর্তৃক সর্বোচ্চ ক্ষমতাপ্রাপ্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা দেশে নােট প্রচলনের একচেটিয়া অধিকার ভােগ করে। অন্যান্য ব্যাংকের যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ কাজ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাহায্যে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সরকারের যাবতীয় কার্যক্রমের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি অর্থায়ন করে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত,

Vera Smith এর মতে, “কেন্দ্রীয় ব্যাংক হল এরূপ একটি ব্যাংক ব্যবস্থা যাতে একক ব্যাংক হিসেবে নােট প্রচলন এর সম্পূর্ণ অধিকর্তা।”

তাহলে এক কথায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্পর্কে বলতে পারি,

  • সকল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রক।
  • ঋণের শেষ আশ্রয়স্থল।
  • মুদ্রা বাজারের অভিভাবক হিসেবে কাজ করে।
  • ব্যাংক সমূহের জন্য আর্থিক নীতির প্রধান হিসেবে কাজ করে।

পরিশেষে বলা যায়, যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেশের ব্যাংকিং পিরামিডের শীর্ষে অবস্থান করে অন্য সব ব্যাংকের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে এবং দেশের কল্যাণে মুদ্রার প্রচলন, ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আওতা বর্ণনা

একটি দেশের মূল চালিকা শক্তি হলো ঔ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক । এক ঘিরেই দেশের সমস্ত মুদ্রা ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা মূলত গড়ে ওঠে । যে ব্যাংক নোট ও মুদ্রার প্রচলন, মুদ্রাবাজার পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য ব্যাংকের ব্যাংকার এবং বিশেষ আর্থিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সরকারকে সহায়তা করে থাকে তাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে । নিম্নে আওতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো –

১। নোট ও মুদ্রা প্রচলনঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম ও প্রধান কাজ হলো দেশের অভ্যন্তরে নোট ইস্যু ও মুদ্রার প্রচলন করা । বাংলাদেশ ব্যাংক আইন অনুযায়ী নোটের বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ রাখে ।

২। মুদ্রার মান নিয়ন্ত্রণঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সকল কাজ করে তার মধ্যে প্রধান কাজ হলো মুদ্রার মান নিয়ন্ত্রণ করা । অর্থের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রা সংকোচন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে । এ ছাড়া মূল্যস্তরের স্থিতিশীলতা রক্ষা ও বিদেশি মুদ্রার বিনিময় হারও নির্ধারণ করে ।

৩। সরকারের ব্যাংকঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের পক্ষ হয়ে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের ব্যাংক বলে । কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের পক্ষে নিম্নলিখিত কাজ করে-

  • সরকারের পক্ষ হয়ে অর্থসংগ্রহ ও সংরক্ষণ
  • সরকারের পক্ষ হয়ে অর্থ প্রদান ও ঋণ গ্রহণ
  • বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তত্ত্বাবধান
  • সরকারের পক্ষে বিদেশ হতে অর্থ গ্রহন ও প্রদান
  • সরকারের হিসাব সংরক্ষণ
  • আন্তর্জাতিক দেনা পাওনা নিষ্পত্তি
  • আমদানি রপ্তানি নীতি প্রণয়ন ইত্যাদি

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং আন্তঃব্যাংকিং দেনা পাওনা নিষ্পত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা নিরূপণ।

৪। ঋণ নিয়ন্ত্রণঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে ঋণ নিয়ন্ত্রণ করে মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রাসংকোচনকে নিয়ন্ত্রণ করে দেশে মূল্যস্তর স্থিতিশীল রাখে ।

৫। অণন্যান্য ব্যাংকের ব্যাংকারঃ বাংলাদেশে তালিকা ভূক্ত ব্যাংকের পক্ষ হয়ে প্রতিদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনেক ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি সম্পাদন করতে হয় । এছাড়া তালিকাভূক্ত ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে । তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অন্যান্য ব্যাংকের ব্যাংকার বলে ।

৬। ঋন দানের শেষ আশ্রয়স্থলঃ তালিকাভূক্ত ব্যাংকগুলো যখন অর্থসংকটে পড়ে অন্য ব্যাংকগুলো থেকে কোন ঋণ সহায়তা পায়না তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সকল ব্যাংকগুলোকে ঋন দিয়ে সহযোগিতা করে ।

৭। বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশের নোটের বিনিময়ে অনুমোদিত আমদানি খাতে ব্যয় করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ ও বরাদ্দ করে ।

৮। নিকাশঘরঃ বাংলাদেশ ব্যাংক নিকাশঘর হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । দেশের বিভিন্ন বানিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে চেক ও অন্যান্য বিনিময়ের মাধ্যমে সৃষ্ট দেনা পাওনা বাংলাদেশ ব্যাংক নিকাশঘরের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করে ।

৯। সরকারের উপদেষ্টা ও প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের মূল্যস্তর এবং বৈদেশিক বিনিময় নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকারকে উপদেশ ও পরামর্শ দিয়ে থাকে ।

১০। মূদ্রার অবমূল্যায়নঃ সরকার যদি নির্দেশ দেয় তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনবোধে টাকার অবমূল্যায়ন করে থাকে । এ অবস্থায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার আয় বৃদ্ধি পায় ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলি বর্ণনা

দেশের অভ্যন্তরে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে :

১. জাতীয় স্বার্থে উৎপাদনশীল সম্পদসমূহের প্রবৃদ্ধি ও ঋণোন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ মুদ্রার মান স্থিতিশীল রাখা এবং টাকার বৈদেশিক বিনিময় হার ধরে রাখার উদ্দেশ্যে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন;

২. দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে হস্তক্ষেপের নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন;

৩. মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিভিন্ন নীতি ও কার্যক্রম গ্রহণ। যেমন:

  • ক. খোলা বাজার কার্যক্রম (ট্রেজারি বিল/বন্ড, রিপো, রিভার্স রিপো নিলাম),
  • খ. সংরক্ষণ অনুপাতের পরিবর্তন যেমন নগদ জমা সংরক্ষণ আবশ্যকতা (CRR) এবং বিধিবদ্ধ তরল সম্পদ সংরক্ষণ আবশ্যকতার (SLR) হার পরিবর্তন,
  • গ. সেকেন্ডারি ট্রেডিং,
  • ঘ. পুনঃবাট্টার হার/ব্যাংক হার পরিবর্তন,
  • ঙ. নৈতিক নিয়ন্ত্রণ;

৪. দেশের ব্যাংকিং খাতের নিরাপত্তা, সুষ্ঠুতা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে এবং ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা, গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তাদের আস্থা ধরে রাখার উদ্দেশ্যে সরেজমিন পরিদর্শন এবং রিপোর্ট ভিত্তিক/দুর অবস্থানিক পরিবীক্ষণের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান;

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং আন্তঃব্যাংকিং দেনা পাওনা নিষ্পত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা নিরূপণ

৫. স্বর্ণ, বৈদেশিক বিনিময়, এসডিআর এবং আইএমএফ-এ সংরক্ষিত মজুদ দ্বারা নিরূপিত বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি ব্যবস্থাপনা;

৬. বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে এককভাবে ব্যাংক নোট ইস্যু;

৭. বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের পারস্পরিক নিরূপিত চেক, ড্রাফট, বিল ইত্যাদি দ্বারা সৃষ্ট আন্তঃব্যাংক পরিশোধ নিষ্পত্তিতে তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহের জন্য নিকাশ ঘর হিসেবে দায়িত্ব পালন;

৮. সরকারের ব্যাংক হিসেবে দায়িত্ব পালন;

৯. দেশের তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহ এবং সরকারের জন্য ঋণের শেষ আশ্রয়স্থল;

১০. মুদ্রা ও ব্যাংকিং বিষয়ে সরকারের পরামর্শদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন; এবং

১১. জাতীয় স্বার্থে প্রবৃদ্ধি সহায়ক কর্মসূচি পরিচালনা।

এর বাইরেও বাংলাদেশ ব্যাংক আরো অন্যান্য উন্নয়নমূলক কার্যাবলী সম্পাদন করে যেমন:

  • নতুন নতুন ইনস্ট্রুমেন্ট প্রচলন;
  • মুদ্রা ও আর্থিক বাজারে অংশগ্রহণকারীদের জন্য গাইডলাইন প্রণয়ন;
  • ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং
  • ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের দ্বারা সম্পাদিত সামাজিক দায়বদ্ধতার কাজ পরিবীক্ষণ করা এবং এ ব্যাপারে তাদেরকে উৎসাহিত করা।

অর্থ বাজার নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যাখ্যা

কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থনীতির প্রয়োজনে অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে বা কমিয়ে থাকে। এর উদ্দেশ্য ঋণের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থবাজারে ঋণের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। এ লক্ষ্যে ব্যাংকটি ঋণ নিয়ন্ত্রণের সংখ্যাত্মক পদ্ধতি খোলাবাজার নীতি অনুসরণ করে। এ পদ্ধতি প্রয়োগের ফলে ব্যাংকটি ঋণ নিয়ন্ত্রণে সফল হয়।

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে আর্থিক বাজার থেকে বেসরকারি বন্ড, সিকিউরিটিজ ত্রবং বিভিন্ন দলিলপত্র কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। এখানে খোলাবাজার নীতি প্রয়োগ করা হয়েছে, যা ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত অর্থবাজারে ঋণ সরবরাহ অপর্যাপ্ত হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেসরকারি বন্ড, সিকিউরিটিজ প্রভৃতি কেনার মাধ্যমে অর্থ সরবরাহ বাড়ায়। আবার, বাজারে ঋণের আধিক্য দেখা দিলে ব্যাংকটি বেসরকারি বন্ড বা সিকিউরিটিজ বিক্রি করে। এতে বাজারে অর্থ তথা ঋণের সরবরাহ কমে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণ সৃষ্টির ক্ষমতাকে ঋণ নিয়ন্ত্রণ বােঝায়। অর্থাৎ এটি এমন এক কৌশল, যা প্রয়ােগ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থনীতিতে ঋণের পরিমাণ কাম্য পর্যায় সীমিত রাখে। এ ঋণ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একক অধিকার ভােগ করে। দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ঋণ নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। পদ্ধতি গুলাে হলঃ

ব্যাংক হারের পরিবর্তনঃ

ঋণের জোগান বাড়ানাের প্রয়ােজন হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রচলিত ব্যাংকের হার কমিয়ে ফেলে। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঘরে ঋণের জোগান বাড়। ব্যাংক হার কমলে বাজারে আবার সুদের হার কমে এবং ঋণের চাহিদা বাড়ে ও ঋণের প্রসার ঘটে। পক্ষান্তরে ঋণের পরিমাণ কমানাের প্রয়ােজন পড়লে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রচলিত ব্যাংক হার বাড়াতে পারে।

খােলা বাজার নীতিঃ

ঋণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খােলা বাজারের সরাসরি ঋণপত্র ক্রয় বিক্রয় করে থাকেন। ঋণের পরিমাণ কমানাের প্রয়ােজন হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খােলা বাজারে ঋণপত্র বিক্রয় করে। জনসাধারণ ঋণপত্র ক্রয় করলে বাণিজ্যিক ব্যাংকে নগদ জমার পরিমাণ হ্রাস পায়। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের ঋণদান ক্ষমতা হ্রাস পায়। আবার ঋণের পরিমাণ বাড়াতে চাইলে কেন্দ্রীয় বাংক খােলাবাজারে ঋণপত্র ক্রয় করে। এর ফলে আবার বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঘরে নগদ জমার পরিমাণ বাড়ে এবং ঋণ সৃষ্টির ক্ষমতা বাড়ে। এভাবে খােলাবাজারে ঋণপত্র ক্রয় ও বিক্রয়ের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রয়ােজনমত ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

রিজার্ভ অনুপাতের হ্রাস বৃদ্ধিঃ

একটি দেশের অর্থনীতিতে যতগুলাে বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে সব ব্যাংক তাদের মূলধনের একটা নির্দিষ্ট অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে। এটি হচ্ছে রিজার্ভ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইলে রিজার্ভের হার পরিবর্তন করে ঋণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বাজারে অর্থের যােগান বেড়ে গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের হাত বাড়িয়ে দেয় এবং এতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলাে পূর্বের তুলনায় কম ঋণ প্রদান করতে পারে।

কোন বাণিজ্যিক ব্যাংক প্রচলিত নিয়ম ভঙ্গ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। যেমন, অতিরিক্ত দন্ডনীয় সুদ চার্জ করা, অতিরিক্ত বিধিবদ্ধ জমা সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া, ব্যাংক রেট বাড়িয়ে দেওয়া ও বিলবাট্টা করণে অতিরিক্ত সুদ ধার্য করা ইত্যাদি।

নিকাশ ঘরের গুরুত্ব ব্যাখ্যা

নিকাশ ঘর (বা ক্লিয়ারিং হাউজ) হল কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দিষ্ট একটি ঘর বা ব্যবস্থা যেখানে বসে আন্তঃব্যাংকিং দেনা-পাওনা নিষ্পত্তি করা হয়। অর্থাৎ, নিকাশ ঘর হলো এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চল বা দেশের তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহ তাদের পরস্পরের মধ্যকার দেনা-পাওনা নিষ্পত্তিকরণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দিষ্ট কোনো স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে একত্রিত হয় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে আন্তঃব্যাংকিং দেনা-পাওনা নিষ্পত্তি করে। বর্তমানে, আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে নিকাশ কার্যক্রমের জন্য নির্দিষ্ট কোন ঘরে একত্রিত হতে হয় না বরং ইন্টারনেট ব্যবস্থার মাধ্যমে এই কার্যক্রম সম্পূর্ণ করা হয়। ইন্টারনেট ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিকাশ কার্যক্রম বা আন্তঃব্যাংকিং দেনা-পাওনা নিষ্পত্তির এই ব্যবস্থাকে বলা হয় স্বয়ংক্রিয় নিকাশ ঘর বা অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ।

এই নিকাশ ঘরের মাধ্যমে সাধারণত গ্রাহকের পক্ষে ব্যাংক অন্য ব্যাংকের চেক নিষ্পত্তি করে এনে দেয়। যখন কোন ব্যাংক গ্রাহক তার নামে ইস্যুকৃত অন্য কোন ব্যাংকের চেক তার নিজের ব্যাংকে জমা করে, তখন ব্যাংক গ্রাহকের হিসাবে উক্ত চেক জমা করে। পরবর্তীতে, ব্যাংক সেই চেক নিকাশ ঘরের মাধ্যমে ইস্যুকারি ব্যাংকের কাছ থেকে চেক উল্লেখিত নির্দিষ্ট অর্থ আদায় করে। চেক ইস্যুকারি ব্যাংক চেকের খুঁটিনাটি পরীক্ষা করে হিসাবধারীর হিসাবে পর্যাপ্ত টাকা থাকা সাপেক্ষে অর্থ পরিশোধ করে। তবে চেক সর্বদা পরিশোধ হয় না। হিসাবধারীর হিসাবে পর্যাপ্ত টাকা না থাকা, অর্থ পরিশোধ না করতে গ্রাহকের নির্দেশনা, নকল চেক বা চেকের পরিশোধের ক্ষেত্রে আইনি বাধ্যবাধকতা পরিপালিত না হলে চেক প্রত্যাখ্যাত হয়।

এটিই তোমাদের এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহ ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর সমাধানদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং আন্তঃব্যাংকিং দেনা পাওনা নিষ্পত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা নিরূপণ।

আরো দেখুন-

প্রতি সপ্তাহে সকল স্তরের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং প্লেস্টোর থেকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখুন।

আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নোটিশ ডট কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক জনাব আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া। জন্ম ১৯৯৩ সালের ২০ নভেম্বর, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়। বাবা আবদুল গফুর ভূঁইয়া এবং মা রহিমা বেগম। এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে আবদুল্লাহ আল আরিয়ান বয়স ৫ বছর। মেয়ে ফাবিহা জান্নাত বয়স ১ বছর। আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া এর শিক্ষাজীবন আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ২০১৮ সালে ম্যানেজমেন্ট এ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটি ঢাকা থেকে বিপিএড সম্পন্ন করেন। আজিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু। এরপর আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ লাকসাম উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কিছুদিন ক্লাস করার পর। পারিবারিক কারণে নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজ এ কিছুদিন রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করার পর ভালো না লাগায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ছাত্র জীবনে তিনি নানা রকম সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কর্মজীবন কর্মজীবনের শুরুতে তিনি আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় যোগদেন। বেশ কিছুদিন পর তিনি ২০১৯ সালে উন্নত ভবিষ্যতের আশায় কুয়েত পারি জমান। কিন্তু সেখানকার কাজের পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় পুনরায় আবার বাংলাদেশে ফিরে এসে পূর্বের পদে কাজে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি স্বপ্ন গ্রাফিক্স এন্ড নেটওয়ার্ক নামে একটি মাল্টিমিডিয়া এবং প্রিন্টিং প্রেস প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী সেই সাথে স্বপ্ন ইশকুল নামক একটি কম্পিউটার ট্রেণিং ইনস্টিটিউট এর মালিকানায় আছেন যেখানে তিনি নিজেই ক্লাস পরিচালনা করেন। লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্ম ছাত্র অবস্থায় তিনি লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্মের সাথে জড়িত আছেন। ২০১১ সালে রাইটার্স এসোসিয়েশন এর ম্যাগাজিনে তার প্রথম লেখা বন্ধু চিরন্তন প্রকাশিত হয়। এর পর তিনি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

অ্যাডস্ ব্লকার পাওয়া গেছে!

দয়া করে আমাদের সাপোর্ট করার জন্য আপনার এডস্ ব্লকার ডিজেবল করে পেইজটি রিলোড করুন! ধন্যবাদ